দেশ এগিয়ে যাচ্ছে ভাবতে ভালই লাগে আমাদের সবারই সেটাই কাম্য হওয়া উচিত। দেশ অনুন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হচ্ছে অবশ্যই এটা আমাদের জন্য অনেক বড় একটি অর্জন নিঃসন্দেহে। সেই আলোকে এদেশের সকল জনগণ তথা দেশের সকল পেশাজীবির ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটবে এটাই স্বাভাবিক। ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটে না শুধু এদেশের এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের। অন্যান্য সকল পেশার পেশাজীবিদের ভাগ্যের উন্নয়ন যতই ঘটুক না কেন তা দেখেও মাউশির এতটুকু চোখ খুলবে না মাউশির।
এদেশের আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় সেবা গ্রহণ নীতিমালার অন্তর্ভুক্ত সেবা কর্মীদের জন্য প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ হতে নববর্ষের উপহার হিসাবে ১ মাসের সমপরিমাণ সেবা মুল্যের অর্ধেক(৫০%) হারে দুটি উৎসব প্রণোদনা ও বৈশাখী প্রণোদনা হিসাবে ১ মাসের সমপরিমাণ সেবা মুল্যের ১ পঞ্চমাংশ(২০%) হারে প্রণোদনা সেবামুল্য প্রাপ্য হবেন।
আরও পড়ুন……উৎসব ভাতা নিয়ে উৎকন্ঠা এবং অন্যান্য ভাতা নিয়ে শঙ্কা!
আউটসোসিং কর্মীদের এই সমস্ত আর্থিক সুবিধা দেওয়ার বিরোধিতা আমরা করছি না। বরং এতে আমরাও তাদের মতো খুশি। কারণ ঐখানে যারা কাজ করে তারা তো আমাদেরই কারও না কারও আত্নীয়, কারও ভাই, কারও সন্তান। কিন্তু প্রশ্ন হলো এদেশে সকল পেশার পেশাজীবিদের যে মুল্য রয়েছে আমাদের কি তা রয়েছে। সকলের চাওয়া পাওয়ার যে মুল্য রয়েছে তার ছিটেফোটাও নেই এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের চাওয়া পাওয়ার। যদি থাকত তাহলে আজ ২২ বছর ধরে আমাদের উৎসব ভাতা ২৫% এ বন্দি থাকত না।
এখন আসি বর্তমান প্রসংগ নিয়ে, বলতে পারেন বাংলাদেশের কোন পেশার অন্তর্ভুক্ত পেশাজীবিরা এখন পর্যন্ত মার্চ ২০২৫ মাসের বেতন পায়নি। বলতে পারেন যে সকল পেশাজীবিরা নববর্ষ ভাতা পায় তাদের মধ্যে কারা এখনও নববর্ষ তথা বৈশাখী ভাতা পাননি। ব্যাতিক্রম শুধু এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীরা।
এদেশের যারা নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে কাজ করেন তাদের নিকট একটা প্রশ্ন করতে চাই তা হলো একটু ভেবে বলেন তো আমাদের কি পরিবার নেই। আপনাদের সন্তানেরা নববর্ষের উৎসব পালন করে তাহলে আমাদের সন্তানদের দোষ কোথায়? আমাদের সন্তানদের কি কোন শখ আহ্লাদ নেই। তারা কি আশা করে না যে নববর্ষের আনন্দ উৎযাপন করার।
আজ ১৫ তারিখ গেল এপ্রিল মাসের আজ পর্যন্ত আমরা মার্চ মাসের বেতন ও বৈশাখী ভাতা পেলাম না। সরকারী চাকুরীজীবিরা যেখানে মার্চ মাসের বেতন পেয়েছেন আজ থেকে ২০-২৫ দিন পূর্বে। মাউশি ছুটির পর অফিস খোলার পর থেকেই প্রতিদিন বলে আসছে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি দুই একদিনের মধ্যে, আগামী সপ্তাহের অমুক দিন, আপনারা বেতন ও বৈশাখী ভাতা একাউন্টে জমা হওয়ার মেসেজ পেয়ে যাবেন। আগে বলত ম্যানুয়ালী বেতন প্রদান করার কারণে দেরি হত এখন ইএফটির মাধ্যমে বেতন প্রদান করতেও যদি এত দেরি হয় প্রতি মাসে তাহলে ইএফটি সিষ্টেম চালু হয়ে কি লাভ হলো। আসলে সমস্যা কি? সেটাও তো বলে না মাউশি।
আজও আমাদের বেতন একাউন্টে জমা না হওয়ার অর্থ এই দাঁড়ায় যে, আগামীকালও জমা হওয়ার সম্ভাবনা নাই বললেই চলে। তাহলে বাকি থাকে বৃহস্পতিবার। বৃহস্পতিবার যদিও জমা হয় তাহলে তা হতে হতে বিকেল নাগাদ মেসেজ পাওয়া যাবে আর সেই টাকা শিক্ষক কর্মচারীদের হাতে আসতে আসতে সোমবার বা মঙ্গলবার।
পরিশেষে বলব মাউশির নিকট আবেদন এই যে, দয়া করে আমাদের সাথে প্রকৃত সমস্যাটা শেয়ার করুন। যদি আমাদের দিক থেকে কোন সমস্যার কারণে প্রতিমাসে এধরনের জটিলতা দেখা দেয় তাহলে সেটা আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিন। আর যদি আপনাদের কোন জটিলতা থাকে তাহলে বলব দয়া করে প্রতিমাসে এভাবে প্রায় ৪ লক্ষ শিক্ষক কর্মচারীদের পরিবার পরিজন নিয়ে খেলা বন্ধ করুন। আর যদি সরকারে ফান্ডিং সমস্যা হয় সেটাও আমাদেরকে বলুন। সত্য স্বীকার করলে বা সবাইকে জানালে কেউ ছোট হয়ে যায় না।
Leave a Reply